একটা উমর এই যামানায় চাই হে মেহেরবান

একটা উমর এই যামানায় চাই হে মেহেরবান

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:৪৬

আমার মা একটা লাল রঙের কাপড় দিয়ে প্যাকেটের মত বানিয়েছেন । নাম নাকি গেলাফ । মা কোরান পড়া শেষ করে গেলাফের ভেতরে সাঁজিয়ে রাখেন । তারপর আলতো একটা চুমু খেয়ে রেখে দেন যত্ন করে।

সেদিন হাত ফসকে গেলাফটা নিচে পড়ে গেলো । চমকে উঠে আমার প্রিয় আম্মাজান ওটা তুলে নিলেন । বুকে কপালে ছুঁইয়ে পরম সম্মানের সাথে রাখলেন যথাস্থানে...

আমি ভাবি...

হায়রে সূতোর বুননে বানানো গেলাফ , কোরানকে ধারন কর বলে তোমার কত সম্মান ! তোমার সামান্য অনাদরে অন্তর শিউরে ওঠে । গায়ে সামান্য ধূলো জমলে ব্যাথা লাগে বুকের গভীরে !

আর...

কোরানের জীবন্ত ধারক হিসেবে যে মুসলমান জাতিকে আল্লাহ নির্বাচিত করলেন ,মনোনীত করলেন, সম্মানিত করলেন... তারা আজ কেমন লাঞ্চনার সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে । প্রত্যেকটা ইবলিশেরহাত আজ প্রতিনিয়ত নিশপিশ করে এই জাতির গালে চপেটাঘাত করতে ! সারা দুনিয়া জুড়ে কি চরম অপমানিত জীবন যাপন...

ভাইদের মৃত্যুতে শকুনদের উল্লাস- নির্যাতিতা বোনেদের হাহাকারে শয়তানদের অট্টহাসি আর অথর্ব রাষ্ট্রনেতৃত্বের ব্যক্তিস্বার্থের দ্বন্দ্ব ।

পৃথিবীর সবকয়টা মুসলিম জনপদ আজ একেকটা রক্তাক্ত কাশ্মীর, একেকটা বিক্ষত ফিলিস্তীন...

ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের চটকদার বিজ্ঞাপণে বিভ্রান্ত বিবেক ! পরের স্টেপ, বিবেকের ঘরে পুরোপুরি সীলমোহর এঁকে নাস্তিকতার দীক্ষা লাভ । হায়রে দরিদ্র মুসলমানের সন্তানেরা, মিশনারী এনজিওদের শিক্ষালয়ে তোমরা শিখছো প্রার্থণার খৃষ্টিও রীতি আর তোমাদের শাষকেরা ইসলাম শিক্ষার সিলেবাসে ১০০ মার্কের পরিবর্তে ৫০ মার্ক রাখার যুক্তি দেয় ! ধিক্কার , ধিক্কার এবং ধিক্কার...

কোরানের ধারকজাতি কোরানকে গেলাফে মুড়িয়ে তাকের ওপড় তুলে রাখে । তো সম্মান কে পাবে ?

কোরানের সাথে যে জড়িয়ে আছে, সে-ই তো সম্মানীত হবে, নাকি ?


-কোরান যে নবীর প্রতি নাজিল হল, তিনি সব নবীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ
-কোরানের সাথে জড়িত বলে রমজান মাস বছরের সবথেকে সম্মানীত মাস
-কোরানের সাথে জড়িয়ে থেকে লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চাইতে শ্রেষ্ঠ সময়
-আর কোরানকে জড়িয়ে রাখে বলে কাপড়ে বানানো গেলাফের কী মর্যাদা আমার আম্মার কাছে !

হে আমার জাতির ভাইয়েরা, হে আমার জাতির বোনেরা ঘুমিয়ে থাকার সময় নেই ! পড়ো সূরা মুদ্দাচ্ছির, ক্বুম-ফায়ানযীর-ওয়া রব্বাকা ফাকব্বির ... কম্বলাবৃত ঘুমন্তকে জেগে উঠতে বলা হচ্ছে, স্রষ্টার শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে !!


-কোরান আবু জেহেল কে রাষ্ট্রনায়ক বানানোর জন্য আসেনি !
-কোরান মদীনা রাষ্টে আক্রমনকারী আবু-জেহেল বাহিনীকে বদর যুদ্ধে বিজয়ী করার জন্য আসেনি !
-কোরান রোম-পারস্যের অত্যাচারী শাষকদেরকে নির্বিঘ্নে প্রভূত্ব চালাতে দেয়ার জন্য আসেনি !


* কোরান এসেছে নবী হত্যার উদ্দেশ্যে খোলা তরবারি হাতে বেরুনো উমর ইবনে খাত্তাব কে খলীফা হযরত উমর বানাতে , অর্ধপৃথিবীর যে প্রতাপশালী শাষণকর্তা ফোরাতের তীরে অনাহারী একটা কুকুরের মৃত্যুর জন্যও নিজেকে দায়ী মনে করে !

* কোরান এসেছে উমর ইবনে আব্দুল আজীজের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা তুলে দিতে

- চাটুকারদের শুভেচ্ছা শুনে জবাবে যিনি বলতে পারেন, তোমরা কাকে মুবারকবাদ দিতে এসেছো, সেই ব্যক্তিকে- যে ধ্বংসের মুখে নিক্ষিপ্ত হয়েছে ? সবচাইতে বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছে গেছে ?

- রাজ-কোষাগার থেকে প্রাপ্ত বিশেষ সুগন্ধি না নিয়ে যিনি বলেন, “খুশবু গ্রহণ করার মত আনন্দের দিন আমার শেষ হয়ে গেছে, ইসলামী শাষনের অন্তর্ভূক্ত সমগ্র এলাকায় যদি একটি প্রাণীও অনাহারে থাকে , কোন একজনের ওপরও যদি যুলুম হয় তাহলে সবার আগে আল্লাহ উমরকে পাকড়াও করবেন।”


হে মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ, কোরানের পাঠকদের মাঝ থেকে অন্তঃত একটা উমর আমাদের জন্য দাও !

No comments:

Post a Comment